Site icon Health Gurukul [ স্বাস্থ্য গুরুকুল ] GOLN

রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ

রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ

আজকে আমরা আলোচনা করবো রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ – যা সুস্থ থাকি, আনন্দে থাকি, নিরাপদ থাকি এর অন্তর্ভুক্ত |

রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ

 

 

সংক্রামক রোগ

কিছু রোগ আছে যেগুলো রোগীর কাছ থেকে অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের রোগকে বলে সংক্রামক রোগ। যেমন ইনফুয়েঞ্জা, হুপিংকাশি, ডিপথেরিয়া, ডায়রিয়া, কলেরা, হেপাটাইটিস, চোখ ওঠা, যক্ষা, টাইফয়েড, হাম, বসন্ত, ম্যালেরিয়া, এইডস, কোভিড-১৯ ইত্যাদি।

মানুষের শরীর ছাড়াও কোনো বস্তু বা অন্য প্রাণীর মাধ্যমে সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে। সংক্রামক রোগগুলো সাধারণত পানি, বায়ু ও পতঙ্গ এই তিন মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। পানিবাহিত সংক্রামক রোগ যেমন- টাইফয়েড, কলেরা, ডায়রিয়া ইত্যাদি। বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ যেমন- জলবসন্ত, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কোভিড’১৯ ইত্যাদি এবং পতঙ্গবাহিত সংক্রামক রোগ যেমন- ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি।

সংক্রামক রোগ ছড়ানোর কিছু মাধ্যম

১. হাত থেকে খাবারে : আমাদের হাতে বিভিন্নভাবে ধুলো-ময়লা লাগে। আমরা যখন খাবার তৈরি, সরবরাহ বা পরিবেশন করি তখন আমাদের হাতের ময়লা খাবারে লেগে বিভিন্ন ধরনের রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে।

২. খাবার থেকে শরীরে : আমরা যদি খাবার ভালোভাবে না ধুয়ে অথবা রান্নার সময়ে ভালোভাবে সেদ্ধ না করে খাই, তাহলে খাবারের মধ্যে থাকা জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে আমাদের বিভিন্নভাবে রোগাক্রান্ত করতে পারে। সংক্রামক রোগ ছড়ানোর অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে পানি। আমরা যদি বিশুদ্ধ পানি পান না করি, তবে পানিতে থাকা বিভিন্ন রোগের জীবাণু সহজেই আমাদের সংক্রমিত করতে পারে।

৩. রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্যের শরীরে : বিভিন্ন রোগাক্রান্ত ব্যক্তির মুখের লালা, নাকের পানি, এমনকি চোখের পানিতেও জীবাণু থাকতে পারে। নাক, মুখ, চোখে হাত দিয়ে সেই হাত না ধুয়ে অন্যের শরীর স্পর্শ করলে তার শরীরও জীবাণু আক্রান্ত হতে পারে। এ ছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি, কাশি দিলে মুখের লালা বা নাকের পানি কণা বা বিন্দু আকারে বাতাসে মিশে থাকে। জীবাণুযুক্ত বাতাস যখন অন্যের শরীরে নাক, মুখ, চোখ দিয়ে প্রবেশ করে তখন সুস্থ ব্যক্তিও বাতাসে ভেসে থাকা এই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।

৪. আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে মশার মাধ্যমে : কোনো কোনো সংক্রামক রোগ যেমন- ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি মশার মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে সংক্রামিত হতে পারে।
৫. রোগে আক্রান্ত প্রাণীর মাধ্যমে : আক্রান্ত কুকুর বা বিড়ালের কামড়ে মানুষের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়।

 

 

সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের উপায় :

উপরের আলোচনা থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারছি, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে আমরা অবশ্যই নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করব:

১. সব সময় খাওয়ার আগে এবং মলত্যাগ করার পর খুব ভালোভাবে সাবান, মাটি বা ছাই দিয়ে হাত ধোব। বাড়ির বাইরে থেকে আসার পরেও সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাতমুখ ধোব।

২. সবসময় বিশুদ্ধ পানি পান করব।

৩. ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া থেকে বিরত থাকব।

৪. নিজে ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা রাখব।

৫. হাঁচি-কাশির সময় অবশ্যই হাতের কনুই অথবা রুমাল দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকব।

৬. ফলমূল বা অন্য কোনো কাঁচা খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই খুব ভালোভাবে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে নেব।

৭. খাবার খুব ভালোভাবে সেদ্ধ করে রান্না করব। বাড়িতে যিনি রান্না করেন তাকে বলব।

৮. পঁচা, বাসি খাবার খাবো না। খাবার সংরক্ষণের জন্য খাবারের মান ঠিক থাকে এমন সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করব। সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ না করলে সে খাবার খাওয়া যাবে না।

৯. যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে রক্ত শরীরে নেওয়ার আগে (পরিসঞ্চালন) অবশ্যই রক্তের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করে নিবো এবং অন্যদেরও বলব।

১০. সহজলভ্য সকল সংক্রামক রোগের টিকা নেব।

১১. যেকোনো মহামারি বা অতিমারির সময় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক যে কোনো নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলব।

১২. টিকা না দেওয়া কুকুর, বিড়াল বা অন্য কোনো বন্য প্রাণীর সংস্পর্শে আসব না।

 

 

অসংক্রামক-রোগ :

যেসব রোগ এক ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে ছড়ায় না, এসব রোগকে অসংক্রামক-রোগ বলে। যেমন- ক্যান্সার, প্যারালাইসিস, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। এসব রোগ সম্পর্কে আমাদের সচেতন ও প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। অসংক্রামক-রোগ প্রতিরোধের উপায় :

আমার দলের তথ্য ও ধারণাগুলোর একটি সারাংশ

এই বই, অন্যান্য শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ইন্টারনেট ইত্যাদির সাহায্যে আমরা আমাদের দলের জন্য নির্ধারিত বিষয়ের তথ্য ও ধারণার খসড়া তৈরি করেছি। শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে সেটি চূড়ান্তও করেছি। এবার নিচের ছকে সেই তথ্য ও ধারণাগুলোর একটি সারাংশ নিজেদের মতো করে লিখে অথবা ছবি এঁকে প্রকাশ করি।

 

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version