আন্তঃসম্পর্কের ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ

আজকে আমরা আলোচনা করবো আন্তঃসম্পর্কের ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ – যা সম্পর্কের যত্নে খুঁজে পাই রত্ন এর অন্তর্ভুক্ত |

আন্তঃসম্পর্কের ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ

এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা জানলাম সম্পর্কের সুবিধা ও গুরুত্ব। তবে কখনো কখনো সম্পর্ক থেকে ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জও তৈরি হতে পারে। কখনো সেই ঝুঁকি হতে পারে অপরিচিত মানুষ দ্বারা; আবার কখনো আমাদের চেনা-জানা মানুষ থেকেও হতে পারে। এমনকি পরিবার, আত্মীয় বা প্রতিবেশী থেকেও হতে পারে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক আমাদের দলে ভাগ করে এ রকম কয়েকটি ঝুঁকির কেস/ঘটনা পড়তে দিয়েছিলেন। আমরা শ্রেণিতে উপস্থাপনও করেছি। নিচে ঘটনা বা কেসগুলো দেওয়া হলো। ঘটনাগুলো পড়ি এবং নিজের মতো করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি।

ঘটনা ১

অনন্যা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিন সে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে তার এলাকার একটি ছেলে তাকে উত্ত্যক্ত করে, অশোভন মন্তব্য করে। তার খুব ভয় কাজ করে, হাত-পা কাঁপে, সে একা চলাফেরা করতে পারে না, মনে হয় কেউ তাকে অনুসরণ করছে। সে খুব অনিরাপদবোধ করে এবং আতঙ্ক লাগে যে ছেলেটা যদি তার কোনো ক্ষতি করে। সে বুঝতে পারছে না যে এই পরিস্থিতিতে সে কী করবে বা কীভাবে তার বাবা-মাকে বিষয়গুলো জানাবে। সে এতটাই মানসিক চাপ বোধ করছে যে সে পড়াশোনা মনোযোগ দিতে পারছে না।

 

আন্তঃসম্পর্কের ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ

ঘটনা ২

শোভন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। সে তার সহপাঠীদের তুলনায় দেখতে মোটা ও লম্বা। তার সহপাঠীরা সব সময় তাকে নিয়ে হাসাহাসি করে, তাকে বিদ্রুপ করে। তাকে বিভিন্ন প্রাণির সাথে তুলনা করে ও ব্যঙ্গাত্মক নামে ডাকে। এমনকি তারা তাকে খেলায় নেয় না, তাদের সাথে মিশতে গেলে তারা তাকে গুরুত্ব দেয় না, এড়িয়ে চলে। শোভনের এই বিষয়গুলো নিয়ে খুব মন খারাপ থাকে। তার নিজেকে খুব ছোট মনে হয়, খুব একা আর অসহায় লাগে। ধীরে ধীরে তার আত্মবিশ্বাস কমে যাচ্ছে, সে সবকিছুতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে ও হতাশ হয়ে পড়ছে। সে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না। আজকাল তার কারও সাথে মিশতেও খুব ভয় হয় ।

 

আন্তঃসম্পর্কের ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ

 

 

ঘটনা ৩

রাফির বয়স ১২। ওরা দুই ভাই বোন— রাফি আর মনিকা। মনিকা বড়। মনিকা কিছুদিন আগে বিদেশে চলে যায়। ওখানে পড়াশোনা করছে। রাফি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বোনের সাথে রয়েছে বয়সের ব্যবধান বোন বিদেশে চলে যাওয়াতে কেমন চুপচাপ হয়ে যায়। বোন বিদেশ থেকে মোবাইল পাঠায়। লকডাউনে স্কুল বন্ধ হবার পর আরো একা হয়ে যায় রাফি। মা ঘরের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। বাবা ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকে বেশি। এই সব ভালো লাগে না রাফির। ইদানিং অনলাইনে কিছু বন্ধুর কাছ থেকে গেম খেলা শিখেছে সারাদিন সারারাত মোবাইলে গেম খেলে।

খাওয়া, ঘুম, সামাজিকতা কিছুই নেই। মোবাইলে যদি চার্জ ন থাকে তাতে সে উদ্বিগ্ন হয়। রুম থেকে বের হয় না। একটা রুমেই বন্দি করে ফেলেছে সে নিজেকে। অসম্ভব মেজাজ হয়েছে তার। সব কিছু কেড়ে নিয়েছে এই মোবাইল যন্ত্রটি। রাফির বাবা-মায়ের মতে সব কিছুর মূলে এই মোবাইল এবং তার প্রতি আসক্তি।

 

আন্তঃসম্পর্কের ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ

 

এবার এই ঝুঁকিগুলোর আলোকে ভাবি, আমার নিজের জীবনে কি এগুলোর কোনোটার মুখোমুখি হয়েছি? এসব ঝুঁকির বাইরেও আর কী ঝুঁকি আমার বা আমার কমিউনিটিতে থাকতে পারে বলে মনে করছি? সেই ঝুঁকিগুলো আমি কীভাবে বুঝব? এই ঝুঁকির ফলে আমার ওপর বা কমিউনিটিতে কী প্রভাব পড়তে পারে? শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। এবার আমার নিজের ভাবনা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে ৩টি ঝুঁকির কথা ভাবি। বাবা-মা বা কমিউনিটির বিশ্বস্ত কার সাথেও এ নিয়ে আলোচনা করতে পারি। এরপর নিচের ছকটি পূরণ করি।

 

আন্তঃসম্পর্কের ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment