মানসিক সুস্থতা অনুশীলন করা আজকের ক্লাসের আলোচনার বিষয়। “Practicing Mental Wellbeing [ মানসিক সুস্থতা ]” ক্লাসটি আমাদের “Mental Wellbeing” সিরিজ এর ৮ম পর্ব। “Mental Wellbeing” সিরিজটির মাধ্যমে মানসিক সাস্থ্যর সকল বিষয় তুলে ধরা হবে।
মানসিক সুস্থতা অনুশীলন করা
একজন মানুষ শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও যদি মানসিকভাবে অসুস্থ থাকে তাহলে দৈনন্দিন জীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কিন্তু সমাজে শারীরিক স্বাস্থের প্রতি যে গুরুত্ব দেয়া হয় মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে বলতে গেলে কোনো গুরুত্বই দেয়া হয়না। আর এর কারণ সচেতনতার অভাব। কেননা মনেরও যে সমস্যা হতে পারে বা মনও যে রোগে আক্রান্ত হতে পারে এমন চিন্তাই বেশির ভাগ মানুষের মাঝে নাই।
সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে যে মনের খবর নেয়াটা বিলাসিতা নয় বরং শরীর ও মন একটি আরেকটির উপর নির্ভরশীল। তাই শরীর সুস্থ ও কার্যস্পৃহা অটুট রাখতে মন সুস্থ থাকা জরুরি। আর মানুষে মানুষে সম্পর্কের ক্ষেত্রে শরীর ও মনের ভালো-মন্দ জিজ্ঞাসাবাদ মন সুস্থ রাখার একটি অনুশীলন। মানুষে মানুষে সম্পর্ক উন্নয়নও হয়।
মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখা সামগ্রিক সুস্থতা ও জীবনমানের জন্য অপরিহার্য। বেশ কয়েকটি কৌশল ও অনুশীলন মানসিক স্বাস্থ্য ভালো এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রচারে সহায়ক…
সংযুক্ত থাকুন
বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে শক্তিশালী সামাজিক সংযোগ বজায় রাখুন। যেকোনো সমস্যার সমাধানে সমর্থন প্রদান পেতে এবং সম্পর্কের অনুভূতি তৈরি করতে নিয়মিতভাবে প্রিয়জনের সঙ্গে ইতিবাচক মিথস্ক্রিয়ায় জড়িত হন।
পেশাদার সহায়তা নিন
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় থাকলে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দ্বিধা করবেন না। থেরাপিস্ট, পরামর্শদাতা ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মূল্যবান দিকনির্দেশনা এবং চিকিৎসা প্রদান করতে পারেন।
নিজ যত্ন অনুশীলন
স্ব-যত্ন ক্রিয়াকলাপগুলোকে অগ্রাধিকার দিন যা আপনার মানসিক সুস্থতাকে লালন করে। এর মধ্যে শখ, শিথিলকরণ কৌশল, মননশীলতা বা ধ্যান অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
সক্রিয় থাকুন
নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ উন্নত মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত। ব্যায়াম এন্ডোরফিন নির্গত করে যা মেজাজ পরিচ্ছন্ন রাখে এবং চাপ কমায়। সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাঝারি ব্যায়ামের লক্ষ্য রাখুন।
একটি সুষম খাদ্য বজায় রাখুন
পুষ্টিকর খাদ্য খান যাতে বিভিন্ন ধরনের ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে। সঠিক পুষ্টি শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে।
পর্যাপ্ত ঘুম পান
প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা মানসম্পন্ন ঘুমের লক্ষ্য রাখুন। মানসিক নিয়ন্ত্রণ এবং জ্ঞানীয় ফাংশনের জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্ট্রেস নিরাময়
কার্যকর স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কৌশল প্রয়োগ করুন, যেমন গভীর শ্বাস, পেশী শিথিলকরণ বা মননশীলতা ধ্যান। মানসিক চাপ কমানো মানসিক স্বাস্থ্যের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ
লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করে যেগুলো অর্জনযোগ্য সেগুলোর কাজ কয়েকটি ভাগে করুন। এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করা আত্মসম্মান ও অনুপ্রেরণাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অ্যালকোহল বা ওষুধের ব্যবহার সীমিত করুন
অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা মাদকের ব্যবহার মানসিক স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। আপনার যদি ওষুধের ব্যবহার সম্পর্কে উদ্বেগ থাকে তবে চিকিৎসকের সহায়তা নিন।
মননশীলতা অনুশীলন
মননশীল ব্যায়াম ও ধ্যান আপনাকে মানসিকবাবে স্থির রাখবে। গুজব, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা থেকে সুরক্ষা দিবো।
অর্থপূর্ণ ক্রিয়াকলাপে নিযুক্ত হন
মানসিক প্রশান্তি ও আনন্দ দেয় এমন কাজকর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখুন। শখ ও ইতিবাচক আবেগের কাজ করুন। এমন কাজ করুন যা কল্যাণে কাজে আসে এতে মনে প্রশান্তি রেখাপাত হবে। শখ এবং আবেগের সাথে জড়িত থাকা সামগ্রিক জীবনের সন্তুষ্টিকে উন্নত করতে পারে।
প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ
চাপ কমাতে ও মানসিক সুস্থ থাকতে প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোর কথা বলা হয়েছে।পার্কে হাঁটাহাঁটি করুন বা সম্ভব হলে বাইরে সময় কাটান।
স্ক্রীন টাইম সীমিত করুন
যতদূর সম্ভব স্মার্টফোন ও কম্পিউটার সম্পর্কে সচেতন হন। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম মানসিক স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
কৃতজ্ঞতা অনুশীলন
জীবনে যেসব প্রাপ্তির জন্য আপনি কৃতজ্ঞ তা নিয়মিতভাবে প্রতিফলিত করুন। কৃতজ্ঞতা অনুশীলন আপনার মনোযোগকে ইতিবাচক চিন্তার দিকে নিয়ে গিয়ে সামগ্রিক সুখকে উন্নত করতে পারে।
সীমানা স্থাপন
মানসিক সমস্যার প্রতিরোধ হিসেবে ও স্বাস্থ্যকর কর্ম-জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে স্পষ্ট সীমানা নির্ধারণ করুন।
অবগত থাকুন
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও এমন বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত থাকুন। যেকোনো ধরনের মানসিক সমস্যার প্রাথমিক স্তর সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক পর্যায়েই তা নির্মূল করা সম্ভব।
সমর্থন সন্ধান
চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে বন্ধু, পরিবার বা সহায়তা করতে সক্ষম এমন কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে দ্বিধা করবেন না। অনুভূতি বিনিময় ও সমর্থন সাইকো থেরাপির মতো কাজ করে সমস্যা লাঘব করতে পারে।
মানসিক সুস্থতা অনুশীলন করা নিয়ে বিস্তারিত ঃ
আরোও পড়ূনঃ